কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনের ঝুকি নিয়ে

শেখ দীন মাহমুদ :-
প্রায় ৬০ বছর পূর্বে নির্মিত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। দ্বিতল ভবনটির ছাঁদসহ বিভিন্ন স্থানের পলেস্তরার বড় বড় অংশ খসে পড়ছে। অতিরিক্ত চাপে দোল খায় ভবনের অংশ বিশেষ। আকস্মিক দূর্ঘটনা এড়াতে কতৃপক্ষ বিভিন্ন স্থানে বাঁশ দিযে ঠেকিয়ে রেখেছে। দক্ষিণ খুলনার অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনির প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত ইউপি ভবনটিতে প্রতিদিন বিচারিক কার্যক্রম,বিভিন্ন জিও-এনজিও’র সভা-সমাবেশ সহ বিভিন্ন কাজে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এমন অবস্থায় যেকোনো সময় ভবনটি ভেঙ্গে ঘটে যেতে পাওে কোন প্রাণঘাতি দূর্ঘটনা। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক ভবনটিকে অত্যন্ত জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করলেও এখন পর্যন্ত পরিষদেও নতুন ভবন নির্মাণ কিংবা সংষ্কারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।
পরিষদ সূত্র জানায়, ১৯৬০ সালে পাকিস্তান শাষনামলে কপিলমুনির প্রাণ কেন্দ্রে স্থাপিত হয় কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি। এর মধ্যে পার হয়ে গেছে ৫৭ টি বছর। বর্তমানে ভবনটির প্রতিটি দেয়ালে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল,খসে পড়ছে ছাদসহ বিভিন্ন স্থানের পলেস্তরা। দোতলার ফ্লোরের অধিকাংশ জায়গার কংক্রিট উঠে সেখানে তৈরী হয়েছে বড় বড় গর্তের। পলেস্তরা খসে বেরিয়ে পড়েছে মরিচায় খাওয়া রড গুলি। যেটুকু এলাকা ভাল রয়েছে সেএলাকার রড গুলিও উঁকি দিচ্ছে বেরিয়ে আসতে। জানালার কাঠগুলোও ঘুণে ধরা। বিভিন্নস্থানে পটি মেরে কোন রকম টিকিয়ে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় তলার অবস্থা আরো নাজুক। কক্ষটিকে বাঁশের ঠেকা দিয়ে কোন রকম টিকিয়ে রাখা হয়েছে। ঠিক এমন অবস্থায়চরম আতংকের মধ্যে পরিষদের সকল প্রকার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান সহ সকল সদস্যরা।
সূত্র আরো জানায়,এর আগে ২০০৬ সালে ভবনটিকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রস্তাব দেয়া হয়। গত ৭ নভেম্বর ১৭’খুলনা জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান পাইকগাছা উপজেলা পরিদর্শন শেষে যাওয়র সময় পথিমধ্যে কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শন করেন। এ সময় পরিদর্শন বইয়ে ভবনটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ এবং বসবাসের সম্পূর্ণ অনুপযোগী বলে উরেøখ করেন। পাশাপাশি ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের কথা বলেন।
এব্যাপারে পরিষদের চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দার বলেন,অত্যন্ত নিরাপত্তাহীনতায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা ইউনিয়ন পরিষদেও সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ গত ১৩ জুলাই উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কপিলমুনি বণিক সমিতির সভাপতি এম বুলবুল আহমেদ তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, যেকোন সময় জরাজীর্ণ ভবনটি ধ্বসে বড় ধরনের কোন প্রাণঘাতি দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। যতদ্রুত সম্ভব ভবনটি অপসারণপূর্বক নতুন ভবন নির্মাণের  কাজ করতে হবে। এব্যাপারে ইউপি সদস্য শেখ রবিউল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন,জনসেবা করতে এসে কোন সময় না জীবনটা হারিয়ে বসি। তিনি যতদ্রুত সম্ভব পরিষদেও নতুন ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনা এড়াতে ২০১৬ সালের ১৫ মে কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম সভাটি পরিষদ মিলনায়তনের পরিবর্তে সামনের রাস্তার উপর খোলা আকাশের নিচে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সর্বশেষ প্রায় ১১ বছর আগে পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কার্যক্রম চলায় প্রতিদিন চরম আতংকের মধ্যে রয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা। তারা যতদ্রুত সম্ভব পরিষদের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মন্তব্যসমূহ