পাইকগাছা পৌরবাসী সুষ্ঠ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত


মোঃ সাইফুল ইসলাম পাইকগাছা,:- খুলনা জেলার একমাত্র "ক" শ্রেণির পৌরসভা পাইকগাছা নানান সমস্যায় জর্জরিত। পৌরবাসী সুষ্ঠু নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে সুষ্ঠু নাগরিক সেবা দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে পাইকগাছা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হলেও আজ পর্যন্ত সুষ্ঠু নাগরিক সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। অল্প দিনে পৌরসভার শ্রেণি পরিবর্তন হলেও সেভাবে কাজের উন্নতি হয়নি পৌরসভায়। প্রায় ২০ বছর পর পৌর কর্তৃপক্ষ পৌরসভার কিছু রাস্তা ঢালাই ও ইট বসানো আর ল্যাম্পপোষ্ট দেওয়া ছাড়া অন্য কোন নাগরিক সেবা দিতে পারেনি বলে জানান পৌরবাসীরা। পৌরসভায় প্রায় ২৫০০০ লোকের বসবাস। ২০১৫ সালের তালিকা অনুযায়ী পৌরসভার ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৪৫০০ পৌর সদরে সকল সরকারি বেসরকারি অফিস আদালত ও বাজার হওয়ায় এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। পৌর এলাকায় কলেজ, মাধ্যমিক স্কুল, আলিয়া মাদ্রাসা, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, প্রাইমারি ও কিন্ডার গার্টেন স্কুল থাকার কারনে প্রতিদিন পৌর সদরে হাজারও ছেলেমেয়ে ছোট ছোট কমল মতি বাচ্চারা লেখাপড়া করছে। ১ থেকে ৯নং ওয়ার্ডে বিভিন্ন সময়ে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে প্রচুর পরিমাণ পাগলা কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। প্রতিদিন কেউ না কেউ কুকুরের কামড়ে আক্রন্ত হচ্ছে এবং পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ার একটু বৃষ্টিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সুষ্ঠু পয়ঃনিষ্কাশন না হওয়ায় জলবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং ড্রেনের উপর স্লাপ না থাকায় ড্রেনের গন্ধ ও মশার পরিমান বাড়ছে। বিভিন্ন স্থানে স্তুপকৃত ময়লা আবর্জনা রাখার কারনে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। পৌর এলাকায় লবন পানি উঠানো নিষেধ থাকলেও কিছু অসাধু ঘের মালিকরা লোনা পানি তুলে মাছ চাষ করছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের কোন খেয়াল নাই। এর কারনে পৌর অভ্যন্তরে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পৌরবাসীর নাগরিক সেবার জন্য পৌরসভা ও নবলোকের মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সুপেয় পানির জন্য লক্ষ-লক্ষ টাকা ব্যয়ে পানির ফিল্টার বসালেও ৫ থেকে ৬ মাস পর সে সব পানির ফিল্টার থেকে পানি নেওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। বর্তমান তার অবস্থা খুবই খারাপ। নবলোকের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ মঈনউদ্দিন শেখ এর কাছে অকেজো ফিল্টার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন বর্তমানে ফিল্টারের অবস্থা খারাপ আছে তবে আমরা অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেব। বিভিন্ন ওয়ার্ডের ফিল্টারের পাশের ভুক্তভুগী লোকজন বলেন এই ফিল্টারগুলো অনেক দিন অকেজো হয়ে পড়ে আছে কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয় না। এই ফিল্টার বানানোর সময় আমাদের কাছ থেকে কিছু পরিমান টাকাও নিয়েছিল আর বলেছিল যদি কখনো এই ফিল্টার নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এই টাকা দিয়ে মেরামত করা হবে। তবে আমাদের টাকারও কোন খোঁজ নাই, আর ফিল্টারতো মেরামতই করে না। আমরা অনেক বার আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে কোন খেয়াল রাখে না। এ বিষয়ে ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ তৈয়েবুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি আমিও জানি তবে খুব শ্রীঘই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও পৌরসভার অনেক বাড়ী এখনও পৌঁছাইনি বিদ্যুতের আলো। পৌরসভায় মশা নিধনের কথা থাকলেও নামে মাত্র প্রতি বছর শহরে কিছু জায়গায় মশা মারা গ্যাস দিয়ে থাকে। উন্নত নাগরিক সেবা দিতে পৌরসভা গঠিত হলেও বর্তমানে সে সব নাগরিক সেবা পাচ্ছে না বলে দাবী পৌরবাসীর। এই সব সমস্যার সমাধান চায় সাধারন পৌরবাসী, চায় সুষ্ঠু নাগরিক সেবা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

মন্তব্যসমূহ