মাওলা বক্স খুলনা:- উপকূলবর্তী বৃহত্তর খুলনার ২৫ উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৫ কোটি টাকা। লবণাক্ত এলাকায় মিঠে পানি সরবরাহ এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। ২০০৭ সালে সিডর এবং ২০০৯ সালে আইলা নামক দুর্যোগে উপকূল এলাকায় নিরাপদ পানির সংকট দেখা দেয়। পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে সুন্দরবনের ৪৩টি কম্পার্টমেন্টে সুন্দরী গাছে টপডায়িং রোগ বিস্তার লাভ করেছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রকাশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব একটি আঞ্চলিক সমস্যা। মাটি ও পানির লবণাক্ততা সুন্দরবন সংলগ্ন ২৫ উপজেলায় অন্যতম দুর্যোগ। উজানে গড়াই নদীতে শুকনো মৌসুমে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ার ফলে বৃহত্তর খুলনায় ভূ-উপরিস্থ পানি ও মাটিতে লবণাক্ততা বেড়ে যায়, যা স্বাভাবিক কৃষি ব্যবস্থা ও শিল্পে বিশুদ্ধ পানির ব্যবহারকে অনিশ্চিত করে তোলে। একদিকে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, জমির উর্বতা হ্রাস পাচ্ছে এবং মানবদেহে আর্সেনিকসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, মিঠে পানি সরবরাহের লক্ষে উপকূলবর্তী খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, ফুলতলা, তেরখাদা, দিঘলিয়া, রূপসা, বাগেরহাট জেলা সদর, মোল্লাহাট, ফকিরহাট, কচুয়া, শরণখোলা, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, চিতলমারি, মংলা, সাতক্ষীরা জেলা সদর, কলারোয়া, তালা, আশাশুনি, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলায় এ অর্থ বছর থেকে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৬৬৪টি গভীর নলকূপ, ৫ হাজার স্থানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, সোলার পাম্পযুক্ত ফিল্টার ও খুলনার ফুলতলা উপজেলায় দু’টি উৎপাদক নলকূপ থেকে ১২ কিলোমিটার এলাকায় পাইপ লাইন স্থাপন করা হবে। সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা, নাকতাড়া, কোদান্ডা, বুড়োখারাটি, শিতলপুর, মহিষকুরসহ এলাকার ১১টি গ্রামে উৎপাদক নলকূপ থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ হবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের খুলনাস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহিদ পারভেজ এ প্রতিবেদককে জানান, বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ফুলতলা উপজেলার ৪ বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিরাপদ পানির সুবিধা দেওয়া হবে।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এসএম ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের পর এ বছর থেকেই নিরাপদ পানি সরবরাহের কাজ শুরু হবে। আগামী অর্থ বছরে তা শেষ হবে। প্রায় পৌণে ২ লাখ জনগোষ্ঠী বিশুদ্ধ পানির সুবিধা পাবে।


মন্তব্যসমূহ