জুতা না পরেই ২১ বছর !

নিউজ ডেস্ক:-

কনকনে তীব্র এই শীতে শীত সইতে না পেরে যখন মানুষ শরীরে একাধিক গরম কাপড় পরিধান করে মোজা ও সু পায়ে দিচ্ছে, তখন দিব্যি খালি পায়ে দিনরাত কাজকর্ম করে বেড়াচ্ছেন নিমু রায়। গত ২১ বছর যাবৎ জুতা পায়ে না দিয়েই জীবনযাপন করছে এই নিমু।
মাঝ বয়সী দিনমজুর নিমু রায় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাট গ্রামের মৃত শুরেন রায়ের পুত্র।
নিমুর এই ব্যতিক্রমধর্মী কর্মকাণ্ডের খোঁজ পেয়ে তার বাড়িতে যায় পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ। কিন্তু বাড়িতে না থাকায় রোববার রাতে স্থানীয়দের সহযোগীতায় নিমুর সাথে পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের সাক্ষাৎ মেলে স্থানীয় একটি বাজারে।
নিমুর সাথে যখন পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজের সাক্ষাৎ হয় তখনো তাকে একটি খরচের ব্যাগ হাতে নিয়ে খালি পায়েই বাজারে অবস্থান করতে দেখা যায়। নিমু তার কর্মস্থল, আত্মীয়-স্বজনের বাসায় এমনকি সরকারী অফিস ও শ্বশুর বাড়িতেও খালি পায়েই যান বলে তিনি জানান ।
কেন তিনি জুতা না পড়ে খালি পায়ে জীবন যাপন করেন জানতে চাওয়া হলে তিনি পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজকে জানান, আজ থেকে ২১ বছর আগে হঠাৎ করেই তিনি একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হন, রোগটির ধরন ছিল মাথা ও চিপ গরম হয়ে যাওয়া। অনেক চিকিৎসার পরেও এ রোগ ভালো না হলে তাকে ডাক্তার খালি পায়ে থাকতে বলেন। আকস্মিক ভাবে যেদিন থেকে তিনি খালি পায়ে বেড়াতে শুরু করেন ঠিক সেদিন থেকে তার রোগটি ভাল হয়ে যায়।
তারপর থেকেই তিনি খালি পায়ে জীবন যাপন করছেন। আগের সেই রোগটি তার মাধ্যে এখনো আছে কিনা এটা পরিক্ষা করার জন্য তিনি মাঝে মধ্যেই জুতা পায়ে দিলেই কয়েক মিনিটের মধ্যেই আবারো তার মাথা ও চিপ গরম হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন। তাই তিনি এখন সারাবছর খালি পায়েই জীবন-যাপন করছেন।
তার স্ত্রী মেঘলা রায় এক প্রশ্নের জবাবে পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজকে বলেন, ‘প্রথমে কিছুদিন তাকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে গেলে কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তাম, কিন্তু এখন তার বিষয়টা সবাই জানে তাই এখন আর কোনো সমস্যা হয় না। এছাড়াও আমাদের ৩ টি সন্তান তাদের বাবার বিষয়টিকে ভালো চোখেই দেখে।’
নিমুর এই জুতা না পড়ার কাহিনী এলাকার ছোট বড় সবাই জানে। নিমুর এই জীবন-যাপনে প্রায় অন্য এলাকার মানুষ তাকে দেখতে ও তার সাথে কথা বলতে প্রায় আসে । তাই এলাকায় সে জুতা নিমু নামেই বেশ পরিচিত।

মন্তব্যসমূহ